সাইফুল ইসলাম (৩০) ও সাবিনা ইয়াসমিন (২৩)। সামাজিক যোগাযোগ গণমাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে তাদের দুজনের পরিচয় হয়। হায়-হ্যালো ইত্যাদি ধরণের কথাবার্তায় গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। শুরু হয় মোবাইল ফোনে যোগাযোগ। এক পর্যায়ে তারা স্বামী-স্ত্রীর মতো অবৈধ মেলামেশা করতে থাকেন তারা। এ প্রেম ও অবৈধ সম্পর্ক শুরু হয় ৫/৬ বছর আগে। সাইফুল ইসলাম টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার পৌর এলাকার আমনগ্রামের মো. তোফাজ্জল হোসেন ছেলে এবং সাবিনা একই উপজেলার পাইস্কা ইউনিয়নের চরধলী গ্রামের আ. সামাদের মেয়ে।
তারপর নানা জল্পনা-কল্পনা অবসান ঘটিয়ে চলতি বছরের উপজেলার পাইস্কা ইউনিয়ন কাজী অফিসে গত ৫ জুলাই শুক্রবার দুজনে ৮০ হাজার টাকা দেন মোহরে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় তারা। বিয়ের পর থেকে সাবিনা তার বাবার বাড়িতে থাকতো। কিছুদিন পর সাবিনার স্বামী সাইফুল তার মায়ের পরামর্শে সাবিনাকে স্ত্রীর মর্যাদা দিতে অস্বীকার করে মানুষিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন প্রতারক সাইফুল। এদিকে, সাবিনার অন্তঃসত্ত্বা। অপর দিকে স্ত্রীর মর্যাদা দাবিতে, গত ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে আজ ৫ দিন ধরে স্বামীর বাড়ি অমানবিক নির্যাতন সহ্য করে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় অনশন করছেন স্ত্রী সাবিনা।
সরেজমিনে সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সাবিনার স্বামীর বাড়ীতে গেলে অনশনরত সাবিনা বলেন, ফেসবুকের মাধ্যমে ৫/৭ বছর আগে পরিচয় হয় তাদের। সাইফুল নানা প্রলোভন দেখিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মতো সম্পর্ক করতো। এরপর কাজী অফিসে গিয়ে দুজনে বিয়ে করি এবং বিয়ের পর থেকেই বাবার বাড়িতে থেকে আসছি। এমনঅবস্থায় মাসখানেক আগে স্ত্রীর মর্যাদা দিতে অস্বীকার করে নির্যাতন করে স্বামী সাইফুল। এ ছাড়াও সাইফুলের পরিবারের লোকজন মারপিট করে তাকে বাড়ী থেকে তাড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা চালায় এবং গর্ভের সন্তান নষ্ট করতে তার মায়ের পরামর্শে সাইফুল তার তলপেটেও লাথি মারে।
এরআগে এ ব্যাপারে সাবিনা ধনবাড়ী পৌর মেয়র বরাবর স্ত্রীর অধিকার পেতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। এ অভিযোগ পেয়ে পৌর মেয়র উভয় পক্ষকে একাধিবার নোটিশ পাঠালেও ছেলে পক্ষ কোন সারা দেয়নি। সুষ্ঠ বিচার ও মিমাংসা না পেয়ে হতাশায় ভেঙে পড়ে ও কোন উপায় না দেখে স্ত্রীর অধিকার মর্যাদার দাবিতে অন্তঃসত্ত্বা সাবিনা স্বামীর বাড়ীতে অনশন শুরু করে।
ধনবাড়ী পৌর মেয়র খন্দকার মঞ্জুরুল ইসলাম তপন এ ঘটনার বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে বিডি জানান, অন্তঃসত্ত্বা ভুক্তভোগী মেয়েটি পৌর সভায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযোগ পাওয়া মাত্র উভয় পক্ষকে নোটিশ করা হয়। মেয়ে পক্ষ হাজির থাকলেও ছেলে পক্ষ হাজির হয়নি। পরবর্তীতে আইনের আশ্রয় নিতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে ধনবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মজিবর রহমান জানান, এ ঘটনার বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি বা কেউ জানায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।