চাঁপাইনবানগঞ্জের শিবগঞ্জে এক যুবককে তুলে নিয়ে তার দুই হাতের কবজি কেটে ফেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। রুবেল হোসেন (২৮) নামে ওই যুবককে আহত অবস্থায় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পদ্মা নদীর একটি ঘাট ও বালু উত্তোলন ঘাটকে কেন্দ্র করে শিবঞ্জের উজিরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যন ফয়েজ ও তার ক্যাডাররা এমনটা করেছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীর স্বজন, এলাকাবাসী ও পুলিশের।
ভুক্তভোগী রুবেল চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ থানার রানিহাটি বাজার নায়ালাভাঙ্গা এলাকার মৃত খোদাবক্সের ছেলে।
রুবেলের চাচাতো ভাই ও আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল সালাম ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, বুধবার রাতে রুবেল তার দুই বন্ধুকে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে বাড়ির দিকে আসছিলো। এ সময় শিবগঞ্জের উজিরপুর বেড়ি বাঁধের কাছে কয়েকজন তাদের পথ রোধ করে ও পাশেই অবস্থিত চেয়াম্যান ফয়েজের চেম্বারে গিয়ে দেখা করতে বলে। রুবেল তার বন্ধুদের নিয়ে চেম্বারে গেলে, তার দুই বন্ধুকে ঘরে আটকে রাখা হয়। আর রুবেলের মুখ ও চোখ গামছা দিয়ে বেঁধে পদ্মা নদীর বাঁধের নিচে নিয়ে যাওয় হয়। সেখানে তাকে নির্যাতন করে দুই হাতের কবজি কেটে নেওয়া হয়।
বুধবার রাত আনুমানিক একটার দিকে খবর পেয়ে পরিবারের লোকেরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। অবস্থা গুরুতর হলে সেখান থেকে রুবেলকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় বলে জানান রুবেলে চাচাতো ভাই আব্দুস সালাম।
উজিরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা দুরুল হোদা জানান, শুনেছি ঘরে আটকে রেখে রুবেলের কবজি কেটে নেয় ফয়েজ চেয়ারম্যান ও তার ক্যাডাররা। ঐ সময় ফয়েজের ১৫/২০ জন ক্যাডার উপস্থিত ছিল।
শিবগঞ্জ পৌরসভা মেয়র কারিবুল হক রাজিন জানান, রুবেল আওয়ামী লীগ কর্মী। এ ঘটনা মর্মান্তিক। জড়িতদের আটক ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
দুর্লভপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজিব রাজু জানান, চেয়ারম্যান ফয়েজ ইউপি ভবনের নীচে একটি অফিস করে সেখানে নানা কাজ কর্ম চলে। তিনি আরো জানান, উজিরপুর জলমোড় এলাকার উত্তর পশ্চিমে পদ্মা নদীর চরে বালু উত্তোলন ও রাধাকান্তপুর-উজিরপুর এলাকায় পদ্মা নদীর, ফেরিঘাট এবং পাঁকা পদ্মা নদীর ফেরিঘাট এর নিয়ন্ত্রক ফয়েজ চেয়ারম্যান। বালু উত্তোলন ঘাট নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষ রুবেলের দুহাতের কবজি কেটে ফেলার ঘটনা ঘটে।
ফয়েজ চেয়ারম্যন পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এমনটা করেছে উল্লেখ করে সালাম জানান, নিউ পদ্মা ফেরি ঘাট নিয়ে বেশ আগ থেকেই চেয়ারম্যান ফয়েজের সাথে তাদের দ্বন্দ্ব চলছিল। নিউ পদ্মা ফেরি ঘাট টেন্ডার এর সিডিউল দাখিলের দিন উপজেলায় রুবেলে সাথে ফয়েজ চেয়ারম্যানের সাথে কথাকাটাকাটি ও ধাক্কাধাক্কি হয়েছিল। এরিই রেস ধরে ফয়েজ ও তার ক্যাডাররা এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে মনে করছি। ফয়েজ ফেরি ঘাটটি পুরোটা নিজের নিয়ন্ত্রণে আনতে রুবেলের সাথে এমনটা করেছে।
শিবগঞ্জ থানার ওসি তদন্ত আতিকুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় জড়িত জাহাঙ্গীর ও আলাউদ্দিন নামে দুজনকে আটক করা হয়েছে।
এ বিষয়ে কথা বলতে চেয়ারম্যান ফয়েজকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।