বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ছেড়েছে শরিক দল খেলাফত মজলিস। শুক্রবার বিকালে এক প্রেস ব্রিফিং থেকে জোট ছাড়ার ঘোষণা দেন দলটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসেন। এ নিয়ে বিএনপির জোট ছেড়ে গেল পাঁচটি শরিক দল।
মজলিসের একাধিক নেতার সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরেই বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোট নিষ্ক্রিয় ও অকার্যকর। আর এই জোটে থাকায় রাজনৈতিক মূল্যায়নও পায়নি মজলিস। সর্বশেষ হেফাজতের নেতাকর্মীদের ধরপাকড়ের ঘটনায় দলটির মহাসচিব অধ্যাপক আহমদ আবদুল কাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি এখনো কারাগারে রয়েছেন। তাই খেলাফত মজলিসের জোট ত্যাগ করার পেছনে রাজনৈতিক কারণই প্রধান।
তবে মজলিসের জোট ছাড়ার পেছনে সরকারকে দায়ী করছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, জোট ছাড়ার সবচেয়ে বড় কারণ সরকারের পক্ষ থেকে দলগুলোর প্রতি চাপ। এছাড়া দলগুলোর মধ্যে বিরোধও রয়েছে। একটি অংশ চলে গেলেও আরেকটি অংশ বিএনপির সঙ্গে রয়েছে। তিনি বলেন, ইসলামী দলগুলোর নেতারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মসজিদের ইমাম কিংবা মাদ্রাসার শিক্ষক। তারা তাদের প্রফেশন ধরে রাখার জন্য অনেক সময় বাধ্যও হন এমন সিদ্ধান্ত নিতে।
সর্বশেষ চলতি বছরের গত ১৪ জুলাই জোট ছাড়ে শরিক দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম। এর আগে ২০১৯ সালের ৬ মে জোট ছাড়েন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) আন্দালিব রহমান পার্থ। তার আগে ২০১৮ সালের ২৬ অক্টোবর বিএনপি জোট ছাড়ে লেবার পার্টি এবং তারও আগে ২০১৬ সালের ৭ জুন বিএনপির জোট ছেড়ে যায় মুফতি ফজলুল হক আমিনীর ইসলামী ঐক্যজোট।
এদিকে জোটের আরেক শরিক মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীকের কল্যাণ পার্টিও বিএনপি জোট ছেড়ে যাওয়ার হুশিয়ারি দিয়েছে। গত ১০ সেপ্টেম্বর কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহম্মদ ইবরাহিম এক অনুষ্ঠানে বলেন, প্রধান শরিক বিএনপি যদি জোটকে সক্রিয় করতে চায়, যদি অতীতের ভুলগুলো আত্মসমালোচনা করে পরিবেশ ভিন্ন করতে পারে, তাহলে আমরা একসঙ্গে পথ চলব। না হলে যদি প্রয়োজন পরে আমরা নিশ্চিতভাবে গণতন্ত্রের স্বার্থে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি পুনর্বহালের আন্দোলনে আলাদা ভূমিকা রাখব।
অপরদিকে কল্যাণ পার্টি ছাড়াও কর্নেল (অব.) অলি আহমেদের লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি-এলডিপিও জোটে থাকা না থাকা নিয়ে আলোচনা শোনা যাচ্ছে।