বরিশালের দুই ছাত্রীর সমকামিতা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। তারা পালিয়ে গিয়ে ‘লিভ টুগেদার’ এর প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ। অথচ তাদের অপহরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছিল পরিবারের পক্ষ থেকে। ওই অভিযোগে একজনকে গ্রেফতারও করে পুলিশ। পরে তদন্তে বেরিয়ে আসে ওই দুই ছাত্রী সমকামিতায় লিপ্ত।
শনিবার (২৪ আগস্ট) বিকেল ৫টায় রাজশাহী মেট্রোপলিটন এলাকার শাহমখদুম থানার নওদাপাড়া এলাকা থেকে তাদের উদ্ধার করে বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ। এরপর রবিবার (২৫ আগস্ট) বেলা ১২টার দিকে তাদের বরিশাল আদালতে হাজির করা হয়েছে।
এর আগে চলতি বছরের ১৯ মার্চ ওই দুই তরুণী নিখোঁজ হন। এ ঘটনায় তিনজনকে আসামি করে একটি অপহরণ মামলা করেন এক তরুণীর বাবা।
তারা হলেন- বরিশাল নগরীর ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের আগরপুর রোডস্থ রাজিয়া ম্যানশনের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেনের মেয়ে ও বরিশাল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি উত্তীর্ণ ফাহমিদ আজমিন তামান্না ও বিএম কলেজ রোড এলাকার বাসিন্দা প্রবাসী নাসির উদ্দিনের মেয়ে কলেজছাত্রী তামান্না আক্তার।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ফিরোজ আলম মামুন জানান, চলতি বছরের ১৮ এপ্রিল আগরপুর রোডের বাসিন্দা বিএনপি নেতা ও স্বর্ণ ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন মিয়া বাদী হয়ে তার মেয়েকে অপহরণের অভিযোগ এনে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় নগরীর অক্সফোর্ড মিশন রোডের আমজাদ মঞ্জিলের ভাড়াটিয়া বাসিন্দা আ. রহমান দুলাল ফকিরের ছেলে উজ্জল হোসেন রানা, স্ত্রী আলেয়া বেগম ও মেয়ে জামাই মো. মাসুমকে অভিযুক্ত করা হয়। এমনকি অপহরণ মামলায় প্রধান আসামি উজ্জল হোসেন রানাকে গ্রেফতারও করা হয়।
এসআই মামুন বলেন, গত চার মাস ধরে বিএনপি নেতার মেয়েসহ অপর ছাত্রী নিখোঁজ ছিলো। পরবর্তীতে তাদের সন্ধান নিশ্চিত হতে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা নেন। এতে ওই দুই ছাত্রীর অবস্থান রাজশাহী মেট্রোপলিটন এলাকায় নিশ্চিত হওয়া যায়। পরবর্তীতে কোতয়ালি মডেল থানার এসআই ফিরোজ আল মামুন এর নেতৃত্বে একটি টিম শনিবার দিনভর রাজশাহী মেট্রোপলিটন এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করেন। পরে সেখানকার শাহমখদুম থানাধীন নওদা পাড়া এলাকায় আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ এর মালিকানাধীন বাড়ি থেকে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়।
এসআই মামুন বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে ওই ছাত্রীরা স্বীকার করেছে যে তারা অপহরণ হয়নি, তারা দু’জন স্বেচ্ছায় পালিয়ে যায়। এমনকি দু’জন আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ নামের ওই ব্যক্তির কাছ থেকে বাসা ভাড়া নিয়ে সেখানে বসবাস করে আসছিল। প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে সমকামিতা থেকেই তাদের এই পালিয়ে যাওয়া। পাশাপাশি অপহরণ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সঠিক নয় বলেও পুলিশকে জানিয়েছে ওই ছাত্রীরা।
রবিবার সকালে তাদের বরিশালে আনা হয়েছে। তাদের স্বজনদের খবর দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি দুপুরে তাদের আদালতে হাজির করা হয় বলেও জানিয়েছেন ফিরোজ আলম মামুন।