শিশুকে যৌন নিপীড়নের ঘটনায় বহু বছর পর অভিযোগ পেয়ে নিজের থেকেই পুলিশের কাছে ধরা দিয়েছেন এক ব্যক্তি। ওই ব্যক্তিকে হুমকি দিয়ে ধর্ষিতা নারী চিঠি পাঠিয়েছিলেন। তাতে লেখা রয়েছে, তুমি নিজের থেকেই পুলিশের কাছে যাও, অন্যথায় আমি পুলিশের কাছে যাবো।
ইংল্যান্ডের ব্রিস্টলের ক্রেইগ বেইলি নামে ওই ব্যক্তি বহুবার ওই নারীকে তার বাল্য অবস্থায় যৌন হয়রানি করেছেন। বেইলির বয়স এখন ৩৬ বছর। হুমকির চিঠি পেয়ে প্রথমে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন। পরে পুলিশের কাছে গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন। পরে এ ব্যাপারে আদালতে শুনানি হয়েছে।
ব্রিস্টল ক্রাউন কোর্টে তার বিরুদ্ধে দু’টি অভিযোগ গঠন করা হয়েছে ১৩ বছরের কম বয়সী নারীকে যৌন নিপীড়নের ব্যাপারে। যৌন নিপীড়নের ব্যাপারে পাঁচটি অভিযোগ উঠেছে। ১৬ বছরের কম বয়সী নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে একটি। এছাড়া ১৩ থেকে ১৬ বছর বয়সী নারীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের বিষয়ে তিনটি অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।
অভিযোগ গঠনের পর ওই নারী ক্রেইগ বেইলিকে বলেন, তোমার কারণে আমার মানসিক সমস্যা হয়ে গেছে। এ সময় বেইলির দু’চোখ বেয়ে অশ্রু ঝরছিল।
ওই নারীর আইনজীবী জেমস টুকার বলেন, বেইলি ওই নারীকে তার অল্প বয়সে জোরপূর্বক স্পর্শ করেন। সেটা সম্পূর্ণ বেইলির দোষ।
ওই ঘটনা বহুবার ঘটেছে। তারপর বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানসিক চিকিৎসা নিয়েছেন ওই নারী। একপর্যায়ে এসে বেইলিকে চিঠি লিখতে পেরেছেন।
ওই নারী চিঠিতে লিখেছেন, তুমি আমার সঙ্গে যা করেছ, তা বছরের পর বছর ধরে আমাকে হতাশার মধ্যে রেখেছে। তোমার কারণে আমি অনেক কষ্ট পেয়েছি, যা আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না। বহু বছর ধরে আমি ভেবেছি যে, সেটা মনে হয় আমারই ভুল। কিন্তু এটা সম্পূর্ণটাই তোমার ভুল।
তিনি আরো লিখেছেন, তুমি আমার এতো বড় ক্ষতি করেছ, যা তুমি ভাবতেও পারবে না। অথচ আমি তোমার ক্ষতি করিনি। বহু বছর ধরে আমি নিজেকে ঘৃণা করেছি। কিন্তু এখন আমি তোমাকে ঘুণা করি। আমি তোমাকে কখনোই ক্ষমা করবো না।
তিনি আরো লেখেন, মানুষ এখন জানতে পারছে এবং এটা কেবল শুরু। তুমি নিজের থেকেই পুলিশের কাছে যাও, অথবা আমি পুলিশের কাছে যাবো।
এ ব্যাপারে বেইলির কোনো বক্তব্য জানা যায়নি। তবে প্রথমে তিনি আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিলেও পরে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচারকাজ শুরু হয়েছে।
তবে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের সময় বেইলির বাবা মারা গেছেন বলে জানা গেছে।