স্ত্রী’র সামাজিক মর্যদা পেতে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার পূর্ব হোসনাবাদ গ্রামে স্বামী এনামুল হক বেপারীর বাড়িতে অনশন শুরু করেছেন ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের এক ছাত্রী।
ধর্ষণ মামলা থেকে রেহাই পেতে ওই ছাত্রীকে বিয়ে করলেও পরবর্তীতে তার খোঁজ খবর না রাখায় শুক্রবার দুপুর থেকে স্বামীর বাড়িতে অনশন শুরু করেন ওই ছাত্রী।
তবে ওই ছাত্রীকে অভিযুক্ত এনামুলের পরিবারের সদস্যরা বিভিন্নভাবে গালাগালসহ নানা ধরনের ভয়ভীতি দেখায় বলে অভিযোগ উঠেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। অভিযুক্ত এনামুল বেপারী ওই গ্রামের আব্দুস ছালাম বেপারীর ছোট ছেলে।
নির্যাতিতা কলেজছাত্রী জানান, ২০১৪ সালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঢাকায় বসে তার সঙ্গে এনামুল হক বেপারীর পরিচয় হয়। এরপর তার সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক হয়। এক পর্যায়ে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে এনামুল একাধিকবার তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করে। গত ফেব্রুয়ারী মাসে তিনি অন্তঃসত্বা হয়ে পড়লে এনামুল তাকে বিয়ে না করে টালবাহানা শুরু করে। এপ্রিল মাসে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে এনামুল কৌশলে বিশেষ ধরনের ওষুধ খাইয়ে পেটের বাঁচ্চা নষ্ট করে দেয়। এরপরও সে বিয়ের নামে টালবাহানা করে।
এতে নিরাশ হয়ে গত ২১ মে ঢাকার জজ কোর্টে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটা মামলা দায়ের করেন তিনি। এনামুল ওই মামলায় আদালতে হাজির হলে বিচারক তার জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেন। মামলা থেকে রেহাই পেতে এনামুল গত ৭ আগস্ট ৫ লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য্য করে তাকে বিয়ে করে জামিনে মুক্তি পায়। জেল থেকে বের হয়ে এনামুল ও তার লোকজন তাকে হত্যাসহ নানা ধরনের হুমকি দিয়ে তার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।
উপায়ন্ত না পেয়ে বিয়ের সামাজিক স্বীকৃতির দাবিতে তিনি শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে স্বামী এনামুলের বাড়িতে পৌঁছলে বাড়ির লোকজন বসতঘর তালাবদ্ধ করে সটকে পড়ে। সামাজিকভাবে বিয়ের স্বীকৃতি পেতে তিনি অনশন শুরু করলে এনামুলের স্বজনরা সংবাদকর্মী ও স্থানীয়দের উপস্থিতিতে তাকে অকথ্য ভাষায় গালগাল করে। তারা ভয়ভীতি দেখিয়ে বাড়ি থেকে চলে যেতে বলে।
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে অভিযুক্ত এনামুল হক বেপারীর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
গৌরনদীর শরিকল পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক অলিউল ইসলাম জানান, কলেজছাত্রীর অনশনের খবর পেয়ে তদন্ত কেন্দ্রের এএসআই আলী হোসেনকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। কলেজ ছাত্রীর লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।