‘ভ্যাম্পায়ার ফেসিয়াল’-এর নাম শুনেছেন কখনো? এটা হলো ত্বকের যত্ন নেওয়ার এমন একটি পদ্ধতি, যেখানে একজন মানুষের নিজের রক্ত নিয়ে তা মুখের ত্বকে ইনজেকশনের মাধ্যমে দেওয়া হয়। এতে বলিরেখা দূর হয় বলে দাবি করা হয়। সোশ্যাল মিডিয়া ইনস্টাগ্রামে এই ফেসিয়াল ভাইরাল হয়ে ওঠে মডেল কিম কার্দাশিয়ানের কারণে।
ইনস্টাগ্রামের বাইরে এই পদ্ধতির নাম হলো প্লাটিলেট রিচ প্লাজমা বা পিআরপি। অদ্ভুত ব্যাপার হলো, শুধু ত্বক নয়, চুলের স্বাস্থ্য ভালো করতেও এই ইনজেকশন ব্যবহার করেন ডাক্তাররা। নিউ ইয়র্কের এক প্লাস্টিক সার্জন, ড. ডেভিড ক্যানজেলো জানান, এই কাজটিতে চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয় ও মাথায় নতুন রক্তনালী গঠিত হয়।
প্রথমে ওই ব্যক্তির শরীর থেকে কিছু পরিমাণে রক্ত নেওয়া হয়। এটাকে আলাদা আলাদা স্তরে ভাগ করা হয়। ডাক্তার এমন একটি স্তর বেছে নেন যাতে অনেক বেশি প্লাটিলেট ও স্টেম সেল আছে। এরপর এই তরলটুকু সিরিঞ্জের সাহায্যে মাথার তালুতে দেওয়া হয়।
এই প্রক্রিয়াটি বেশ খরুচে। নিউ ইয়র্কে এই ট্রিটমেন্টের খরচ ৮০০ থেকে ১২০০ মার্কিন ডলার। তবে যাদের কোনো উপায়েই চুল পড়া বন্ধ হয়নি এবং টাক দূর হচ্ছে না, তারা এই পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন।
যেকোনো ধরনের চুল পড়ায় অবশ্য এটা কাজ করে না। সাধারণত বয়সের সাথে, বংশগত কারণে যেসব নারী ও পুরুষের চুল পড়ে যাওয়া শুরু হয় তাদের এবং অ্যালোপেশিয়া অ্যারিয়াটা নামের জটিলতায় এই প্রক্রিয়া কাজে আসে। এই প্রক্রিয়াটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠার একটি অন্যতম কারণ হলো, এতে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই বললেই চলে। সাধারণত ইনজেকশনের জায়গাটা অসাড় করতে একটি ক্রিম ব্যবহার করা হয়। অল্প ব্যথা, লালচেভাব ও মাঝে মাঝে দাগ দেখা দিতে পারে। যদি কারো তালুতে ইনফেকশন বা সোরিয়াসিস থাকে, তাহলে এই পদ্ধতি ব্যবহারের আগে অপেক্ষা করতে বলা হয়।
পিআরপি করার পর সুবিধা পেতে কতটা সময় লাগতে পারে? তা নির্ভর করে চুল পড়ার কারণ ও ধরনের ওপর। কারো কারো চুল পড়ে যায় স্ট্রেস, গর্ভাবস্থা বা কোনো ট্রমার কারণে। দ্রুত পিআরপি করালে কিছুদিনের মাঝেই নতুন চুল গজাবে। কিন্তু অনেকদিন ধরে টাক হয়ে আছে এমন মানুষের ওপর পিআরপি করালে অল্প পরিমাণে চুল গজাতে দেখা যায়। তবে তাদের যতটুকু চুল আছে, সেটা বেশ ঘন হয়ে ওঠে। মোটামুটি ৩-৬ মাসের মাঝে উপকারিতা পাওয়া যায়। তবে এই প্রক্রিয়াটি শতভাগ কাজ করে না। এমনকি এই প্রক্রিয়ার রেশ কেটে গেলে আবারো টাক দেখা দিতে পারে।