1. techostadblog@gmail.com : Fit It : Fit It
  2. mak0akash@gmail.com : AL - AMIN KHAN : AL - AMIN KHAN
  3. admin@sangbadbangla.com : admin :
বৃহস্পতিবার, ২৫ মে ২০২৩, ০৯:৩৭ অপরাহ্ন

‘আপা, পিছেনে তাকাবেন না’

Reporter Name
  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ২১ আগস্ট, ২০১৯
  • ৪২৭ বার পঠিত

সে সকালে আমার প্রিয়তম মানুষটির হাতের আলতো স্পর্শে আমার ঘুম ভেঙেছিল। আজ সকালটা অন্য রকম। বিদেশের মাটিতে একটি হাসপাতালে সে প্রিয়তম মানুষটির হাত ধরে বসে আছি। গত এক মাস চার দিন আগে ঢাকার একটি হাসপাতালে অকস্মাৎ ভর্তি করাতে হয়েছিল মানুষটিকে। জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটিকে ফিরিয়ে আনবার প্রানান্ত চেষ্টায় দেশের মধ্যের সম্ভব সবটুকু করবার শেষে এক পর্যায়ে দেশের বাইরে নিয়ে আসতে হয়েছে। জানিনা ভবিষ্যৎ কি। চেষ্টা চলছে। খুব সামান্য হলেও কিছু দৃশ্যমান অগ্রগতি আছে। এ পর্যন্ত আসতে পেরেছি সৃষ্টিকর্তার অপার কৃপায়।পরিবার, নেত্রী, বন্ধু, সুহৃদ, সবার, বিশেষত আমার নির্বাচনী এলাকার মানুষের দোয়া, ভালোবাসা, শুভকামনা আর সহযোগিতা সঙ্গী ছিলো, আছে প্রতিটি মুহূর্তে। সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞ। সবার কাছে দোয়া চাই। আমাদের সকল চেষ্টা যেন সফল হয়।

‘সকালে হাতের ওপর আলতো স্পর্শে ঘুম ভাঙলো। চোখ মেলে দেখি আমার স্বামী পাশে বসে অপলক তাকিয়ে আছেন আমার দিকে। চোখ মেলতে দেখে নরম ধরা গলায় বললেন, ‘সেই ২১ আগস্টে আমার বউ জীবিত ফিরে এসেছিল। আল্লার কাছে কৃতজ্ঞ।’

মুহূর্তের মধ্যে মনে হলো ফিরে গেলাম সেই ভয়াল বিকেলে। গ্রেনেড আর গুলির বিকট শব্দ, বারুদ আর রক্তের গন্ধ, ধোঁয়া, আহতদের আর্তচিৎকার, মানুষের ভয়ার্ত ছুটোছুটি, কান্না আর মৃত্যুর হাতছানি। আবার চোখদুটো বন্ধ করে সৃষ্টিকর্তার উদ্দেশ্যে নীরবে বললাম, ‘বেঁচে আছি, আমি কৃতজ্ঞ।’

সাথে সাথেই মনে হলো আমি আছি, অনেকেই আছি, আবার অনেকেই নেই। আইভি চাচী নেই, আদা চাচা নেই, কুদ্দুস নেই। আরও ১৯ জন নেই। সেই প্রচন্ড ভীড়ে আমার সামনে গায়ের সাথে সেঁটে দাঁড়ানো মহিলা আওয়ামী লীগের বোনটি নেই, যার রক্তে লাল হয়েছিলো আমার শাড়ী।

সেদিন প্রথমে দাঁড়িয়ে ছিলাম ট্রাকটির পশ্চিম দিকে যেদিক দিয়ে নেত্রীর গাড়ী ট্রাকের ওপরে থাকা মঞ্চের কাছে আসবে, যেখানে আইভি চাচী দাঁড়িয়েছিলেন তাঁর নেতা কর্মীদের নিয়ে। গাড়ী আসবার কিছুক্ষণ আগে প্রচন্ড ভীড়ের মধ্যে দাঁড়ানো দু’জন ডাক্তার, আমি আর রোকেয়া আপাকে ডাঃ মোস্তফা জালাল মহিউদ্দীন ভাই ডাকলেন ২৩ বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউ এর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ঢোকার করিডোরের সামনের ফুটপাথে তাঁর পাশে গিয়ে দাঁড়াতে। বহু কষ্টে ভীড় ঠেলে সেখানে গিয়ে দাঁড়িয়েছিলাম।

নেত্রী এলেন। বক্তব্য রাখলেন বিএনপি জামায়াতের গ্রেনেড বোমা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আয়োজিত সে শান্তি সমাবেশে। বক্তব্য শেষের পরপরই শুরু হয় নারকীয় তান্ডব। ১৩ টি গ্রেনেড (তখন ভেবেছিলাম বোমা) ছোড়া হলো পরপর। নিজেদের জীবনের তোয়াক্কা না করে নেত্রীকে ঘিরে মানববর্ম তৈরী করেছিলো ট্রাকের ওপরে থাকা নেতৃবৃন্দ। অলৌকিক ভাবে বেঁচে গেলেন প্রানপ্রিয় নেত্রী। গ্রেনেড দিয়ে তাঁকে হত্যা করতে ব্যর্থ হয়ে তারপর শুরু হয় তাঁর গাড়ীকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ। তখন চারদিকের নারকীয় বিভৎসতার মধ্যে প্রচন্ড চাপের মধ্যে বসে পড়তে চেষ্টা করলাম গুলি এড়াতে। এর মধ্যেই দু’জন ছাত্রলীগ কর্মী আমার দু’হাত ধরে আমাকে হিঁচড়ে টেনে নিয়ে যেতে শুরু করে। চারদিকে তখন লাশ, ছিন্নবিচ্ছিন্ন দেহ, রক্তের বন্যা। হাজার হাজার জুতো স্যান্ডেল পড়ে আছে। কয়েক হাত যাবার পরেই আবার বিষ্ফোরণ।

এই পোস্টটি সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর
© ২০১৯, সংবাদ বাংলা
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: The IT King